সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:৩৮ পূর্বাহ্ন

জেলা-উপজেলায় প্রতিনিধি আবশ্যক :
Welcome To Our Website...
প্রধান সংবাদ :
বরিশাল মৎস্যজীবী দলের সভাপতি রুস্তম আলী মল্লিকের বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে আওয়ামী লীগের দোসরদের পুনর্বাসনের অভিযোগ বরিশালে সুরুজ গাজী হত্যার নেপথ্যে যুবদল নেতা উলফাত রানা রুবেলের চাঁদাবাজির ভাগ-বাটোয়ারা! বরিশালের ভাটিখানায় কারারক্ষী শহিদুলের প্লান বহিভূত ভবনের বর্ধিত অংশ অপসারণের নির্দেশ চুরি হওয়া ফোন উদ্ধার করে চোরকে পুলিশে দিলেন ববি ছাত্রদল আদালতের নির্দেশের পরও দায়িত্ব বুঝে পাচ্ছেন না বাউফলের হাজী পঞ্চম আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বরিশাল মহানগরীর ২৭ নং ওয়ার্ড বিএনপিতে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে নাসির উদ্দিন ডাকসুতে আওয়ামী লীগ-জামায়াত ‘আঁতাত’ করে ছাত্রলীগের সব ভোট নিয়ে নিয়েছে শিবির সাংবাদিক ইমরান খান সালামের ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে বাকেরগঞ্জে মানববন্ধন সংবাদ সংগ্রহকালে সন্ত্রাসী হামলার শিকার বাকেরগঞ্জ প্রেসক্লাব সম্পাদক ইমরান খান সালাম শিগগিরই দেশে ফিরছেন তারেক রহমান
রাজনীতিতে ধর্মকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার!

রাজনীতিতে ধর্মকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার!

Universalnews24.com is an online news portal in Bangladesh. It's edited and published by Jalal Ahmed Mridha (Journalist Ahmed Jalal).


আহমেদ জালাল : ভারতীয় উপমহাদেশে বহুকাল আগ থেকেই ধর্মকে বর্ম হিসেবে ব্যবহার, দুর্নীতি, কালো টাকা আর দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি চলে আসছে। এরফলে সৎ, একনিষ্ঠ, সৃষ্টিশীল, মুক্তমনা মানুষেরা যেন কোনঠাসা হয়ে পরাজিত হচ্ছে। রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, দূরদৃষ্টি ও বিচক্ষণতার ঘাটতির কারণেই কি অপরাজনীতি বিরাজমান? রাজনীতিতে ধর্মকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার বিষয়টি দৃশ্যমান। অনেক আগ থেকেই ধর্মকে বর্ম হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। ধর্মের আফিম ধীরে ধীরে রাজনীতির পতাকা তলে গিয়ে একাকার হয়ে গেছে। বলা যায়-ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে রাখতে সব শাসকগোষ্ঠিই ধর্মকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। এই সভ্য যুগে এসব কিভাবে মেনে নেওয়া যায়? এটা কি একধরণের বর্বরতা নয়? ধর্মকে শাসকগোষ্ঠি ক্ষমতার সিড়ি হিসেবে ব্যবহার করছে। এতে যা হচ্ছে-মানুষ এর বিপরীতে ধর্মকেই বড় করে দেখানো হচ্ছে। তবে কি ধর্ম নামক আফিমের বিষবৃক্ষে ছেয়ে গেছে গোটা দেশ? বলা যায়, স্ব স্ব ধর্মের শ্রেষ্ঠত্বের বিষবৃক্ষে ছেয়ে গেছে গোটা দেশ!

আফিম তবুও ভালো, ধর্ম সে তো হেমলক বিষ

প্রতিবাদী কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ লিখেছেন-আফিম তবুও ভালো, ধর্ম সে তো হেমলক বিষ।
যেমন রক্তের মধ্যে জন্ম নেয় সোনালি অসুখ
তারপর ফুটে ওঠে ত্বকে মাংসে বীভৎস ক্ষরতা।
জাতির শরীরে আজ তেম্নি দ্যাখো দুরারোগ্য ব্যাধি
ধর্মান্ধ পিশাচ আর পরকাল ব্যবসায়ি রূপে
ক্রমশঃ উঠছে ফুটে ক্ষয়রোগ, রোগেরপ্রকোপ
একদার অন্ধকারে ধর্ম এনে দিয়েছিল আলো,
আজ তার কংকালের হাড় আর পঁচা মাংসগুলো
ফেরি কোরে ফেরে কিছু স্বার্থাণ্বেষী ফাউল মানুষ-
সৃষ্টির অজানা অংশ পূর্ণ করে গালগল্প দিয়ে।
আফিম তবুও ভালো, ধর্ম সে তো হেমলকবিষ।
ধর্মান্ধের ধর্ম নেই, আছে লোভ, ঘৃণ্য চতুরতা,
মানুষের পৃথিবীকে শত খণ্ডে বিভক্ত করেছে
তারা টিকিয়ে রেখেছে শ্রেণীভেদ ঈশ্বরের নামে।
ঈশ্বরের নামে তারা অনাচার করেছে জায়েজ।
হা অন্ধতা! হা মুর্খামি! কতোদূর কোথায় ঈশ্বর!
অজানা শক্তির নামে হত্যাযজ্ঞ কতো রক্তপাত,
কত যে নির্মম ঝড় বয়ে গেল হাজার বছরে!
কোন্ সেই বেহেস্তের হুর আর তহুরাশরাব?
অন্তহীন যৌনাচারে নিমজ্জিত অনন্ত সময়?
যার লোভে মানুষও হয়ে যায় পশুর অধম।
আর কোন দোজখ বা আছে এর চেয়ে ভয়াবহ
ক্ষুধার আগুন সে কি হাবিয়ার চেয়ে খুব কম?
সে কি রৌরবের চেয়ে নম্র কোন নরোমআগুন?
ইহকাল ভুলে যারা পরকালে মত্ত হয়ে আছে
চলে যাক সব পরপারে বেহেস্তে তাদের
আমরা থাকবো এই পৃথিবীর মাটি জলে নীলে,
দ্বন্দ্বময় সভ্যতার গতিশীল স্রোতের ধারায়
আগামীর স্বপ্নে মুগ্ধ বুনে যাবো সমতার বীজ।

অজানা শক্তির নামে হত্যাযজ্ঞ কতো রক্তপাত,
কত যে নির্মম ঝড় বয়ে গেল হাজার বছরে!
কোন্ সেই বেহেস্তের হুর আর তহুরাশরাব?
অন্তহীন যৌনাচারে নিমজ্জিত অনন্ত সময়?
যার লোভে মানুষও হয়ে যায় পশুর অধম।
আর কোন দোজখ বা আছে এর চেয়ে ভয়াবহ
ক্ষুধার আগুন সে কি হাবিয়ার চেয়ে খুব কম?
সে কি রৌরবের চেয়ে নম্র কোন নরোমআগুন?
ইহকাল ভুলে যারা পরকালে মত্ত হয়ে আছে
চলে যাক সব পরপারে বেহেস্তে তাদের
আমরা থাকবো এই পৃথিবীর মাটি জলে নীলে,
দ্বন্দ্বময় সভ্যতার গতিশীল স্রোতের ধারায়
আগামীর স্বপ্নে মুগ্ধ বুনে যাবো সমতার বীজ।

মানুষ বড় না ধর্ম বড়?

ভারতীয় উপমহাদেশের অধিকাংশ লোকজনই বলবে যে ধর্ম বড়। আবার কোন ধর্ম বড় সেটা নিয়ে রয়েছে বড় ধরণের বিভাজন। ধর্ম নিয়ে ঘটছে যতসব নষ্টামী। ধর্মের কারণে মানুষকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে এখনও এই বঙ্গদেশে। ভারতীয় উপমহাদেশে ধর্মের কারণে কত যে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হচ্ছে সেসবের কি কোন হিসেবে আছে? স্ব স্ব ধর্মের লোকজনই স্ব স্ব ধর্মকে শ্রেষ্ঠ হিসেবে মনে করে। এই যে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে কত মানুষের প্রাণ যে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।

মানবতাই হোক আমাদের সবার ধর্ম

মানুষ হত্যা করে কি ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করা যায় ? ‍মানুষই শ্রেষ্ঠ ধর্ম। তাই, মানবতাই হোক আমাদের সবার ধর্ম। বলতে চেয়েছি ধর্ম বড় না মানুষ বড়? বলতে চেয়েছি আগে ধর্ম না মানুষ? সবার উপড়ে মানুষ সত্য তার উপড়ে নাই। এই মহান সত্যকে কেন যে আমরা ধারণ করতে পারিনা! ধারণ তো আপনগতিতে হয় না, ধারণ করার পরিবেশ গঠন করতে হবে।

জন্মের পর একটি শিশু কোন ধর্মের?

জন্মের পর একটি শিশু কোন ধর্মের? যখন আস্তে আস্তে বড় হয় আর আস্তে স্ব স্ব ধর্মের ধর্মের শ্রেষ্ঠত্বের নানা কল্পকাহিনী শেখানো হয়। এটা শুধুই কি পরিবারে? না-সর্বত্রই এহেন মনগড়া স্ব স্ব ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব শেখাতে শেখাতে মানুষে মানুষে বিভাজনও বেড়ে যায়। রাষ্ট্রীয় কাঠামো পরিবর্তনের মাধ্যমে এসবের মূলোৎপাটনে অগ্রনী ভূমিকা রাখতে পারে। রাষ্ট্রযন্ত্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ধর্ম নামক আফিম খাইয়ে যেন ঘুম পড়িয়ে রাখা হয়েছে। জীবন জগত বিষয়ে কোন হুশ নেই। সর্বত্র ধর্মজীবীরা মাইকিং করে পাড়া-মহল্লায়, অলিগলিতে, গ্রামে গ্রামে, ধর্ম দিয়ে একদিকে লোভ দেখানো হয়, আবার আরেকদিকে মগজে ভয় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়।

মানুষকে খুন করতে উন্মাদ হয়ে ওঠে

প্রকাশ্যে মাইকিং এবং ইউটিউবে সর্বত্র বাহারী কায়দায় স্বর্গ তথা বেহেস্তের লোভ দেখানো হচ্ছে। লোভ করা বা দেখানো বড় ধরণের অপরাধ। আর এই ধর্মের নামে ধর্মজীবীরা লোভ দেখিয়ে চলছে। এই যে লোভ এবং ভয় এর পাশাপাশি ধর্ম জীবীরা অন্য ধর্মকে কটাক্ষ করে চলছে। ছড়ানো হচ্ছে ঘৃনা-বিদ্বেষ। বিশেষ করে নারীকে মানুষ হিসেবেই গণ্য করছে না ধর্মজীবীরা। এবং মানুষে মানুষে এমনভাবে বিভাজন সৃষ্টি করে যাতে ধর্মজীবীরা ও তাদের অনুসারীরা মানুষকে খুন করতে উন্মাদ হয়ে ওঠে। অন্য ধর্মের লোক অর্থাৎ বিধর্মী কিংবা নাস্তিকদের কতল করার জন্য স্রেফ মগজ ধোলাই করা হয়। মগজ ধোলাইয়ে এরা সফলও হয়। কি ভয়ঙ্কর! এ কেমন ধর্ম? যে ধর্ম প্রচার করে মানুষ মানুষকে খুন করার জন্য উন্মাদ হয়ে যায়, মানুষের বাড়ি-ঘর-ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাড়খার করে দিতে মত্ত হয়ে ওঠে। এহেন ঘৃন্যতম যতসব বর্বরতা প্রচার চালিয়ে আসলেও এইসব ধর্মজীবীদের বিষয়ে শাসকগোষ্ঠি সব সময়ই নিরব থাকে।

মানুষের জন্য ধর্ম, ধর্মের জন্য মানুষ নয়

প্রশ্ন হচ্ছে-সার্বজনীন জনগণের মঙ্গল কামনা কেন করা হয়না? কেন এইসব ধর্মজীবীদের লাগাম টেনে ধরা হয় না? এইসব ধর্মজীবীরা দিনে দিনে বেপরোয়াভাবে বেড়েই চলছে। এতে পরিবার-সমাজ-রাষ্ট্রের জন্য অশুভ বার্তা। সভাযুগে এখনও ভয়ানক বর্বরতার প্রচার চালানো হলেও তারা থাকে বহাল তবিয়তে। আর সৃষ্টিশীল মুক্ত চেতনার মানুষদের বহু ধরণের বাঁধার মুখোমুখি হতে হয়। ধর্মজীবীদের হাতে খুন হয় সৃষ্টিশীল মুক্ত চেতনার মানুষরা। তাজ্জ্বব! রাষ্ট্রযন্ত্রও যেনো বেপরোয়াভাবে ধর্মজীবীদের পক্ষ নিয়ে প্রগতিশীল, সৃষ্টিশীল মুক্তচেতনার মানুষদের হয়রানি করে। চালানো হয় নির্মম নির্যাতন, এহেন বর্বর নির্যাতনে কতো প্রাণ যে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। অবশ্য পঞ্চাশ ও ষাটের দশকের ছাত্র রাজনীতি দিয়ে যাঁরা রাজনীতি শুরু করেছিলেন তাঁদের চিন্তা চেতনা প্রজ্ঞা-জ্ঞান-গরিমায় অনেকটা এগিয়ে ছিলেন।
মানবিক সমাজ এবং মানবিক রাষ্ট্র গঠনে আত্মসচেতনতা, আত্মোপলব্ধি, আত্মশুদ্ধির মতো বিষয়গুলোর চর্চার ক্ষেত্র ক্রমেই কমে যাচ্ছে। আবারও বলছি- মানুষের জন্য ধর্ম, ধর্মের জন্য মানুষ নয়।

গড়ে উঠুক মানবিক সমাজ

জাগ্রত হোক মানুষের বিবেক। গড়ে উঠুক মানবিক সমাজ। মূলত: যেদিন মানবিক সমাজ গড়ে উঠবে, সেদিনই সমাজে শান্তি ফিরে আসবে।
অন্যায়, অনিয়ম, দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়ন আর ধর্ম নামক আফিমের বিষবৃক্ষে ছেয়ে গেছে গোটা দেশ। এই বিষ রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে ধ্বংস করছে দেশের সকল প্রতিষ্ঠান। যতদিন এই সমাজ ব্যবস্থা এই রাষ্ট্র কাঠামোতে ধর্মের আফিম থাকবে ততই হরেক রকম বিষবৃক্ষ থাকবে। মূলোৎপাটন করা হোক ধর্মের আফিম।
পরিশেষে- মানুষই শ্রেষ্ঠ ধর্ম। তাই, মানবতাই হোক আমাদের সবার ধর্ম।


Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved ©2022-2025 universalnews24.com
Design By Ahmed Jalal.
Design By Rana